বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ বছরে বগুড়া জেলায় ফুলের চাষ অনেক বেড়েছে

পাঁচ বছরে বগুড়া জেলায় ফুলের চাষ অনেক বেড়েছে

বগুড়া সদরের গোকুল গ্রামের ফুলচাষী মোঃ আজমল হোসেন জানালেন, প্রায় পাঁচ বছর যাবত তিনি ফুলচাষ করে আসছেন। চলতি মৌসুমে তিনি এক বিঘার কিছু বেশি জমিতে ফুলের আবাদ করেছেন। এ পরিমাণ জমিতে অন্য ফসল আবাদ করলে উত্পাদন খরচ উঠানো খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ মৌসুমে ফসলের দাম পড়ে যায়। তাই তিনি ফুলচাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

এক বিঘা জমিতে ফুলচাষ করলে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করা যায়। আর বগুড়ায় ফুলের চাহিদা বেশি থাকায় বাজারজাত করতেও তেমন বেগ পেতে হয় না। গত বছর তিনি প্রায় এক একর জমিতে ফুলচাষ করেছিলেন।

এতে সাড়ে তিন লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি করতে পেরেছিলেন। চলতি মৌসুমে কম জমিতে ফুলচাষ করা সম্পর্কে তিনি বলেন, জমিতে ফুলের আবাদ করতে খরচ অনেক বেশি। ফুলচাষে ব্যাংক ঋণ পাওয়া খুবই কঠিন। তবে ব্যাংক ঋণ পেলে আরো বেশি জমিতে তিনি ফুলের আবাদ করবেন।

সদরের বাঘোপাড়া এলাকার ফুলচাষী মো. বাবু মিয়া বলেন, তিনি পাঁচ বছর ধরে ফুলের আবাদ করছেন। চলতি মৌসুমে তিনি দুই বিঘা জমিতে ফুলের আবাদ করেছেন। ফুলের আবাদ করতে প্রায় পাঁচ মাস লাগে।

এ সময়ের মধ্যে একবিঘা জমিতে ফুল চাষ করলে প্রায় এক লাখ টাকা বিক্রি করা যায়। তবে ফুলের পরিচর্যা করতে মজুর না পাওয়ার কারণেও ব্যাপক ভাবে ফুলচাষ করতে পারছেন না অনেক ফুলচাষী। গোকুল এলাকার ফুলচাষী আব্দুল হান্নান জানালেন, চার বছর যাবত তিনি ফুলচাষ করে আসছেন। একবিঘা জমিতে ফসলের আবাদ করলে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ঘরে তোলা কষ্টকর। তবে ফুল চাষ করলে সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়ে থাকে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় প্রায় ১৩ প্রকারের ফুলের চাষ হয়ে থাকে। এরমধ্যে রয়েছে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, বাগান বিলাস, চন্দ্র মল্লিকা, ডালিয়া, কসমস, দোলন চাঁপা, নয়নতারা, মোরগঝুটি, কলাবতী ও জবা ফুল। প্রায় পাঁচ বছর আগে বগুড়ার ফুল ব্যবসায়ীরা যশোর ও কুষ্টিয়া জেলা থেকে ফুল নিয়ে আসতো। বর্তমানে এ জেলায় উত্পাদিত ফুল দিয়েই এলাকার চাহিদা পূরণ হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহযোগিতায় চার জেলার মধ্যে বগুড়ায় ফুলের আবাদ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। বিগত ২০১২ সালে বগুড়ায় ফুলের আবাদ হয়েছিল সাড়ে ৪ হেক্টর জমিতে। আট বছরের ব্যবধানে বর্তমানে ফুলের আবাদ হচ্ছে প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে।

দৈনিক বগুড়া