বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়া ধুনটের নামকরণ ও তার ইতিহাস

বগুড়া ধুনটের নামকরণ ও তার ইতিহাস

ধুনট উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান -এ উপজেলার উত্তরে গাবতলী ও সারিয়াকান্দি উপজেলা, দক্ষিণে রায়গঞ্জ উপজেলা, পূর্বে কাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে শাহজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলার অবস্থান। জেলা শহর বগুড়া হতে ৩৬ কিঃ মিঃ দক্ষিন পূর্বে ধুনট উপজেলার অবস্থান। বর্তমানে উপজেলা সদর এবং মূলবাজার ছিল অধুনা মরা ইছামতি নদীর পূর্বপারে।

বিভাগঃ রাজশাহী বিভাগ
জেলাঃ বগুড়া জেলা

আয়তন- ২৪৭.৭৫ বর্গকিমি।
জনসংখ্যা- ২,৭০,৮১০ জন (২০০১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী)। বর্তমানে জনসংখ্যা উল্লেখিত জনসংখ্যার অনেক বেশি।

পুরুষ ১৩৬৫০১, মহিলা ১৩৪৩০৯। মুসলিম ২৫৮৬২২, হিন্দু ১২১৪৯, বৌদ্ধ ১০, খ্রিস্টান ১৬ এবং অন্যান্য ১৩ জন।

ঘনত্ব- ১০৭৩ বর্গকিমি।

শিক্ষার হারঃ ৬০%

নির্বাচনী এলাকা- ৪০- বগুড়া-৫।

সরকারী হাসপাতাল-০১ টি।

হাট-বাজার-৩০ টি।

গ্রাম-২১২টি।

ভোটার সংখ্যা-১,৮২,৪৮১ জন।

কৃষি পরিবার সংখ্যা-৯০,৯৭৭ টি।

মোটা আবাদী জমি-৪৫,৩৩৫ একর।

খাদ্য চাহিদা (২০১০-২০১১)-৩৫,১৮০ মেঃটন।

খাদ্য উৎপাদন(২০১০-২০১১)-৮৫,২৭০ মেঃ টন।

সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়-৯৬ টি।

বেসরকারী প্রাঃ বিদ্যালয়- ৯৭ টি।

কলেজ- ৯টি।

মসজিদ সংখ্যা -৩৪৫ টি।

মন্দিরের সংখ্যা -১৫ টি।

সরকারী জলাশয়ের সংখ্যা -৫৪ টি।

নদী- ৩টি, যমুনা, বাঙ্গালী ও ইছামতী।

ইউনিয়ন-১০ টি। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে-১নং নিমগাছি, ২নং কলেরপাড়া, ৩নং চিকাশী, ৪নং গোসাইবাড়ী, ৫নং ভান্ডারবাড়ী, ৬নং ধুনট সদর, ৭নং এলাঙ্গী, ৮নং চৌকিবাড়ি, ৯নং মখুরপুর, ১০ নং গোপালনগর ইউনিয়ন।

সংক্ষপ্তি ইতিহাসঃ
উপজেলার নামকরন হলো যেভাবে-এক সময় এই এলাকায় কোন জনবসতি ছিল না। কয়েকশত বছর পূর্বেই গোটা এলাকা সরোবরের তলদেশে নিমজ্জিত ছিল। জানা যায়,  বগুড়া শেরপুর থেকে ময়মনসিংহের শেরপুর পর্যন্ত ছিল শুধু পানি আর পানি। বারতম শতাব্দীর শেষ দিকে (১২৮৬) এবং তেরতম শতাব্দীর শুরুর দিকে (১৩০৪) ভয়াবহ ভূমিকম্পে এলাকাটি বর্তমান স্থল ভাগের রুপ লাভ করে এবং ধীরে ধীরে উর্বর পলল গঠিত হলে এই ভূমিতে জনবসতি শুরু হয়। ধুনট উপজেলা নামকরণ নিয়ে নানামুখি প্রচারনা রয়েছে। জনশ্রুতি আছে সেকালে ইছামতি নদীর নাব্যতা ছিল প্রখর। তিনটি নদীর মোহনা ছিল এখানে। কাকশাল বংশিয় মাস্তানেরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। প্রায়ই নৌকা পথে আসা জনগণ এবং মহাজনি নৌকা এ এলাকায় এলেই জলদস্যুগণ তাদের ধন মাল লুট পাট করত। আর এরুপ ধন লুট হতেই এস্থানের নাম ধুনট হয়েছে বলে জানা যায়।

বর্তমান উপজেলার ইতিহাস-১৩ নভেম্বর ১৮২১ রাজশাহী জেলার আদমদীঘি, নওখিলা, বগুড়া ও শেরপুর(পরীক্ষামুলক) রংপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ এবং দিনাজপুর জেলার লাল বাজার, ক্ষেতলাল ও বদলগাছি থানা সমন্বয়ে বগুড়া জেলা গঠিত হয়। ১৮৪৫ সালে সিরাজগঞ্জ মহাকুমা সৃষ্টি করে রায়গঞ্জ থানা বগুড়ার সঙ্গে যুক্ত করে মহাকুমার নিয়ন্ত্রণ বগুড়া প্রশাসনের উপর ন্যস্ত করা হয়। ১৪ জানুয়ারী ১৮৭৪ সালে রায়গঞ্জ থানা পাবনা জেলার সাথে যুক্ত করা হলে বর্তমানে ধুনট গ্রামে পরীক্ষামূলক একটি স্বতন্ত্র থানা প্রতিষ্ঠিত হয়ে।

১৮৯৬ সালে বর্তমান হাসপাতালের দক্ষিন পূর্ব কোনে সিটি সেন্টার সংলগ্ন স্থানে থানা স্থানান্তর করা হয় এবং রায়গঞ্জ থানার উত্তর অঞ্চল ও সারিয়াকান্দি থানার দক্ষিন অঞ্চল নিয়ে ধুনট থানা গঠিত হয় (জানা যায় ঐ সময় সদর ধুনট এলাকার দস্যুতা অত্যাধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় এদের দমনার্থে ধুনট গ্রামে থানা স্থাপন করা হয়) ১৯২৩ সালে ২৭ জুন কলকাতা গেজেটে মোতাবেক পশ্চিমে বাঙ্গালী এবং পূর্বে যমুনা নদী সীমা নির্ধারণ করে ধুনট নিবাসী বাবু বি,কে চন্দ্রের ১.৭২৬ একর জমি অর্থাৎ সোয়া পাচ বিঘা জমি অধিগ্রহন করে বর্তমান স্থানে থানা ভবন স্থানান্তর সহ একটি সম্পন্ন থানা স্থাপন করা হয়।তবে বাংলা পিডিয়ায় তথ্য অনুয়ায়ী ধুনট থানা গঠিত হয় ১৯৬২ সালে আর ২৪ মার্চ ১৯৮৩ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জারীকৃত পরিপত্রে অনুযায়ী ধুনট উপজেলা প্রশাসন চালু হয়।

দৈনিক বগুড়া